পবিত্রকুরানের সুরা নাহলের পিপড়া। শিক্ষনীয় গল্প:
পবিত্র কুরআনের একটা সুরার নামকরণ করা হয়েছে পিঁপড়ার নামে, ২৭ নং সুরা— সুরা নামল। বিজ্ঞানীদের মতে পিঁপড়া একটা অসাধারণ বুদ্ধিমান প্রাণী, এরা দলবদ্ধ ও সামাজিক প্রাণী।এরা নিজেদের মধ্যে বিভিন্ন উপায়ে যোগাযোগ করে।পিঁপড়ার ব্যাপারে কুরআন-হাদিস কী বলে? চলুন দেখি।
** আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ(ﷺ)-কে বলতে শুনেছি যেকোন একজন নবীকে পিঁপড়া কামড় দেয়। তিনি পিঁপড়ার বাসাটি জ্বালিয়ে দেয়ার আদেশ করেন এবং তা জ্বালিয়ে দেয়া হয়। আল্লাহ তাঁর প্রতি ওহী অবতীর্ণ করেন– তোমাকে একটি পিঁপড়া কামড় দিয়েছে আর তুমি আল্লাহর তাসবীহ পাঠকারী জাতিকে জ্বালিয়ে দিয়েছ।
[সহীহ বুখারী, হাদিস : ৩০১৯; অধ্যায়: জিহাদ | অনুচ্ছেদ: আল্লাহর তাসবীহ পাঠকারী জাতি এক পিঁপড়ার কারনে অন্য সব পিপঁড়াকে মারা যাবে না]
** ইবন মাসঊদ(রা) বর্ণনা করেন, এক সফরে আমরা রাসুলুল্লাহ(ﷺ) এর সঙ্গে ছিলাম। তিনি প্রাকৃতিক প্রয়োজন পূরণের জন্যে বাইরে গেলেন। এসময় আমরা লাল রঙের একটি ছোট পাখি দেখলাম। তার সঙ্গে দু’টি বাচ্চা ছিলো। আমরা তার দু’টি বাচ্চাকেই ধরে ফেললাম। তখন এই লাল রঙের ছোট্ট পাখিটি নিজের পালক ফুলিয়ে আমাদের কাছে এল। ইতোমধ্যে রাসুলুল্লাহ(ﷺ)ও উপস্থিত হলেন।
তিনি বললেনঃ “একে এর সন্তানদের ব্যাপারে কেউ ভয় দেখিয়েছে।এর বাচ্চাদেরকে এর কাছে ফেরত দাও।”
এ সময় তিনি পিঁপড়াদের জ্বালিয়ে দেয়া বাসার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেনঃ “কে এগুলোকে জ্বালিয়ে দিয়েছে?”
আমরা নিবেদন করলামঃ “আমরা জ্বালিয়ে দিয়েছি।” রাসুলুল্লাহ(ﷺ) (রাগত স্বরে) বললেনঃ “আগুন দ্বারা আগুনের প্রভুই[অর্থাৎ একমাত্র আল্লাহ তা’আলা] কাউকে শাস্তি দিতে পারেন।
[আবু দাউদ, রিয়াদুস সলিহীন: বই ১৮, হাদিস ১৬১০; অধ্যায়: কোন প্রাণীকে এমনকি পিঁপড়াকেও আগুন দ্বারা শাস্তি দেয়া নিষেধ]
(ইমাম আবু দাউদ সহীহ সনদসহ হাদীসটি বর্ণণা করেছেন)
** “সুলাইমান দাউদের উত্তরাধিকারী হয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘’হে লোকসকল, আমাকে উড়ন্ত পাখিদের ভাষা শিক্ষা দেয়া হয়েছে এবং আমাকে সব কিছু দেয়া হয়েছে। নিশ্চয়ই এটা [আল্লাহর]সুস্পষ্ট অনুগ্রহ।’’ সুলাইমানের সামনে তাঁর সেনাবাহিনীকে সমবেত করা হল। জ্বিন, মানুষ ও পাখিদেরকে, অতঃপর তাদেরকে বিভিন্ন ব্যূহে বিভক্ত করা হল।
যখন তারা পিঁপড়াদের উপত্যকায় পৌঁছাল, তখন এক পিঁপড়া বলল, “হে পিঁপড়া বাহিনী, তোমরা তোমাদের বাসায় ঢুকে পড়। না হলে সুলাইমান ও তাঁর বাহিনী নিজেদের অজান্তেই তোমাদেরকে পিষ্ট করে ফেলবে।”
তার কথা শুনে সুলাইমান মুচকি হাসলেন এবং বললেন, “হে প্রভু, আপনি আমাকে সামর্থ্য দিন যাতে আমি আপনার সেই নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি, যা আপনি আমাকে ও আমার বাবা-মাকে দান করেছেন এবং যাতে আমি সৎকর্ম করতে পারি যা আপনি পছন্দ করেন। এবং আপনার অনুগ্রহে আমাকে আপনার সৎকর্মপরায়ন বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করুন।”
(কুরআন, নামল(পিঁপড়া) ২৭:১৬-১৯)
*** নবী মুহাম্মাদ(ﷺ) ওহীর মাধ্যমে আমাদেরকে পিঁপড়া, পাখি এবং আল্লাহর অন্যান্য মাখলুকের উপর দয়া করতে শিখিয়েছেন। তিনি দয়ার নবী।তাঁর উপর আল্লাহর রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক।
0 Comments