ভারত কি নিষিদ্ধ যৌনতায় মজেছে? কী বলছে সমীক্ষা?
ওয়াইফ সোয়াইপিং বা বউ বদল এখন বাস্তব ঘটনা।’— কয়েক বছর আগে এক ছবির সূত্রে বলেছিলেন
অভিনেত্রী পাওলি দাম। ‘লভ গেমস’ নামে তাঁর একটি ছবির চিত্রনাট্য ছিল বউ বদল
নিয়েই।কিন্তু সত্যিই কি ভারতে প্রতিনিয়ত লেখা হচ্ছে বউ বদলের নয়া কাহিনি? ভারত কি নিষিদ্ধ যৌনতায় মজেছে? কী বলছে সমীক্ষা? চার বছর আগে নিয়েলসন ভারত জুড়ে একটি সেক্স সার্ভে করেছিল। তাঁদের দাবি ছিল,
সমীক্ষায় উঠে আসা ভারতের ‘সেক্স সিক্রেট’ দেখলে চমকে যাবে গোটা দুনিয়া। আর
সেখানেই ওয়াইফ সোয়াপিংয়ের মানদণ্ডে প্রথমে উঠে এসেছে আসানসোলের নাম। ঠিকই পড়ছেন, কলকাতা থেকে সামান্য দূরত্বের এই আধা শহর বউ বদলকে প্রায়
শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। ওষুধের দোকানের মালিক থেকে মাঝারি শিল্পপতি
অনেকেই বেশ সাবলীল ভাবে কথাও বলেছিলেন এ নিয়ে। কেরালার কোট্টায়াম ছিল দ্বিতীয় স্থানে।নিয়েলসনের টেনথ অ্যানুয়াল সেক্স সার্ভের হিসেব বলছে, ওয়াইফ সোয়াপিংয়ের মতো
যে কোনও রকম নিষিদ্ধ যৌনতায় এগিয়ে চারটি মেট্রো শহর— নয়াদিল্লি, মুম্বই,
চেন্নাই এবং কলকাতা। আর এই শহর ছাড়াও নিষিদ্ধ যৌনতায় এগিয়ে কোটা,
মোরাদাবাদ, কোলাপুর, সালেম, কোট্টায়াম, গুন্টুর, আসানসোল, আইজল এবং বালেশ্বর। ২০১৩ সালে বিষয়টি প্রথম গণমাধ্যমের সামনে আসে যখন যুদ্ধজাহাজ আইএনএস কোচিতে কর্মরত এক নৌসেনা অফিসারের বিবাহ বিচ্ছিন্না স্ত্রী অভিযোগ করেন নৌসেনার কয়েক জন অফিসারের বিরুদ্ধে। পরস্পরের মধ্যে তাঁরা স্ত্রী
দেওয়া-নেওয়া করেন, নিজের স্ত্রীকে সহকর্মী বা জুনিয়রের হাতে তুলে দিয়ে
সহকর্মী বা জুনিয়রের স্ত্রীকে আপন করে নেন অফিসাররা। কিন্তু তখন বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায়। সুপ্রিম কোর্ট নতুন করে অভিযোগটির তদন্ত শুরুর নির্দেশ দেওয়ায় বিষয়টি আবার সামনে এসেছে।
এক নজরে সমীক্ষা |
১) মধ্যপ্রদেশের র্যাটলামে পার্টনারকে পোশাকহীন অবস্থায় দেখা মানুষের কাছে চূড়ান্ত অবসেশন। |
২) কোট্টায়ামের ৯ শতাংশ মানুষ যৌন মিলনের সময় উত্তেজনা বাড়াতে যৌন বলবর্ধক ওষুধ ব্যবহার করেন। |
৩) কোটার ৫৮ শতাংশ মানুষ শারীরিক মিলনের পর পার্টনারের আবেগকে প্রতারিত করে। |
৪) ভারতে ওয়ান নাইট স্ট্যান্ডসের রাজধানী গুন্টুর। |
৫) পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলে ওয়াইফ সোয়াপিংয়ের ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে। |
৬) র্যাটলামের ১৪ শতাংশ মানুষ হোমোসেক্সুয়াল। অনেকে আবার নিজের সন্তানের সঙ্গেও সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। |
কিন্তু ওয়াইফ সোয়াইপিং বা বউ বদলের প্রতি কেন আকৃষ্ট হন মানুষ? মনোবিদ অনুত্তমা
বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘‘সাধারণত দীর্ঘ দাম্পত্যের পথ হাঁটতে গিয়ে অন্য
কারও সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা অপরিচিত নয়। কিন্তু সে ক্ষেত্রে
যেটি উল্লেখযোগ্য তা হল, দু’জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সহমত এবং সম্মতি। তার
সামাজিক, মানসিক পরিণতি এবং জটিলতা অবশ্যই অস্বীকার করা যায় না। কিন্তু
সেখানে যৌন নির্যাতনের ছবি বিষয়বস্তুহয়ে ওঠে না।ফিল্মি দুনিয়াতেও কখনও কখনও ওয়াইফ সোয়াইপিং মূল বিষয় হয়েছে। ২০০৪-এ ‘ওয়াইফ
সোয়াইপিং’ নামের একটি শো প্রথম টেলিকাস্ট হয় মার্কিন এবিসি চ্যানেলে। বছরে
মাত্র এক বার মাস তিনেকের জন্য দেখানো হয় শো-টি। শুরু থেকেই তুমুল জনপ্রিয়
শো-টির জন্য অপেক্ষায় থাকেন দর্শকরা। আবার
বলিউডে ‘আজনবি’ ছবিতে এক রাতের বউ বদলের ঘটনা নিশ্চয়ই মনে করতে পারবেন
সিনে-পাঠক। বিশেষজ্ঞদের মতে, দর্শকরা যার সঙ্গে রিলেট করতে পারেন তার
জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়। ফলে ওয়াইফ সোয়াইপিং সত্যিই যে এখন বাস্তব ঘটনা তা আর
বলার অপেক্ষা রাখে না। তথ্য সুত্র: আনন্দ বাজার পত্রিকা ।
0 Comments